ভারতের বিভিন্ন বিদ্রোহ

বৈদিক সভ্যতার ইতিহাসসিন্ধু সভ্যতা সম্বন্ধীয় প্রশ্ন ও উত্তর
200 টি সেরা ইতিহাস জিকেপ্রাচীন ভারতের ইতিহাস জিকে প্রশ্ন

1. ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কে?
(A) শাহ ওয়ালিউল্লাহ
(B) সৈয়দ আহম্মদ
(C) হাজী শরিয়ৎউল্লাহ
(D) মৌলানা মহসীন

Ans-(B) সৈয়দ আহম্মদ ( ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলন শুরু করেন দিল্লীর প্রখ্যাত ধর্মজ্ঞানী মুসলমান শাহ ওয়ালিউল্লাহ।তবে ঊনিশ শতকের প্রথমে উত্তরপ্রদেশের রায়বেলির সৈয়দ আহম্মদ (1786 – 1831) এই আন্দোলনের প্রকৃত সূত্রপাত করেন এবং জনপ্রিয় ও প্রসারিত করেন।
* সৈয়দ আহম্মদ 1831 খ্রিস্টাব্দে বালাকোটার যুদ্ধে শিখ সেনাপতি শের সিং এর হাতে নিহত হন এবং সেই সঙ্গে সঙ্গে ওয়াহাবীবাদের পতন ঘটে)। 

2. “ওয়াহাবি”- শব্দের অর্থ কি?
(A) ইসলামের শুদ্ধিকরণ
(B) ইসলাম নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্ত্যব
(C) নতুন পথের আলো
(D) নবজাগরণ
Ans-(D) নবজাগরণ
( এই আন্দোলনের প্রকৃত নাম ” তারিখ-ই-মহম্মদীয়া” বা “মহম্মদ নির্দেশিত পথ”। 

3. বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা কে?
(A) তিতুমীর
(B) গোলাম মাসুম
(C) হাজী শরিয়ৎউল্লাহ
(D) সাইফুদ্দিন আহমেদ
Ans- (A) তিতুমীর
( তিতুমীরের প্রকৃত নাম আসল নাম মীর নিসার আলী (1782 – 1831)।
বাংলাদেশের বারাসাত – বসিরহাটের(উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায়) বিস্তৃত অঞ্চলে মহাজন-জমিদার-নীলকদের বিরুদ্ধে নির্যাতিত মানুষদের নিয়ে লারকেলবেড়িয়ার গ্রামে বাঁশের কেল্লা তৈরি করে সংগ্রাম করেন। গভর্নর জেলারেল লর্ড উলিয়াম বেন্টিং এর উদ্যোগে কামানের গোলায় বাঁশের কেল্লা(এটি বাদুরিয়া থানা থেকে 10 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত) বিধস্থ হয়।এর ফলে তিতুমীর পরাজিত ও নিহত হন(1 লা নভেম্বর 1831খ্রি:)।
* তিতুমীরের এই বিদ্রোহ(ওয়াহাবি আন্দোলন) “বারাসাত বিদ্রোহ” নামেও পরিচিত)।

4. ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রকৃত নাম কি?
(A) তারিখ-মহম্মদীয়া
(B) ইসলামের শুদ্ধিকরণ
(C) মহম্মদ নির্দেশিত পথ
(D) A এবং C দুটিই সঠিক
Ans-(D) A এবং C দুটিই সঠিক 

5. তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা যখন আক্রমণ হয় তখন গভর্নর জেনারেল কে ছিলেন?
(A) লর্ড উলিয়াম বেন্টিং
(B) ওয়ারেন হেস্টিংস
(C) লর্ড ক্যানিং
(D) লর্ড আর্মহাস্ট
Ans- (A) লর্ড উলিয়াম বেন্টিং
( লর্ড উলিয়াম বেন্টিং এর পুরো নাম লর্ড উইলিয়াম হেনরি কাভেন্ডিস- বেন্টিং।তিনি ইতিহাসে লর্ড উলিয়াম বেন্টিং নামেই প্রসিদ্ধ।বেন্টিং(1774 – 1839) ছিলেন একজন ব্রিটিশ সামরিক কর্মকর্তা ও প্রশাসক। তিনি প্রথমে গভর্নর জেনারেল ছিলেন 1828 – 1833 এবং পরে গভর্নর জেনারেল ছিলেন 1833 – 1835। বেন্টিং 17ই জুন 1839 সালে ফ্রান্সের প্যারিসে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
* বেন্টিং ছিলেন প্রধানমন্ত্রী উলিয়াম ক্যাভেন্ডিস ও ডরোথি বেন্টিং এর দ্বিতীয় সন্তান)।

6. তিতুমীরের প্রধান সেনাপতি নাম কি ছিলো?
(A) তারেক আজিজ
(B) নিত্যগোপাল ঘোষ
(C) গোলাম মাসুম
(D) বিহারিলাল সরকার

Ans-(C) গোলাম মাসুম (ইনি ছিলেন তিতুমীরের ভাগ্নে)। 

7. আঠারো শতকের শেষ দিকে  ভারতে  ওয়াহাবি আন্দোলন  সূচনা করেন কে?
(A) শাহ ওয়ালিউল্লাহ
(B) সৈয়দ আহম্মদ
(C) হাজী শরিয়ৎউল্লাহ
(D) মৌলানা মহসীন
Ans-(A) শাহ ওয়ালিউল্লাহ
( ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলন শুরু করেন দিল্লীর প্রখ্যাত ধর্মজ্ঞানী মুসলমান শাহ ওয়ালিউল্লাহ।তবে ঊনিশ শতকের প্রথমে (1820 সালে) উত্তরপ্রদেশের রায়বেলির সৈয়দ আহম্মদ (1786 – 1831) এই আন্দোলনের প্রকৃত সূত্রপাত করেন এবং জনপ্রিয় ও প্রসারিত করেন। এই আন্দোলনের প্রকৃত সূত্রপাত হয় আরব দেশের মক্কায় প্রখ্যাত ধর্মজ্ঞানী মুসলমান আব্দুল ওয়াহবের নেতৃত্বে(1703 – 1787)। 

8. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে কোথায় সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের সূচনা হয়?
(A) ঢাকায়
(B) রংপুরে
(C) দিনাজপুরে
(D) ময়মনসিংহে
Ans-(A) ঢাকায় (1760/63 -1800) সালে)।
তবে এই বিদ্রোহ ঢাকা ছাড়াও রংপুর-ফরিদপুর-দিনাজপুর-ময়মনসিংহ-কোচবিহার মালদহ-বগুড়া জেলায় ব্যাপক প্রসার লাভ করেছিলো।
ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ করেছিলেন বাংলাদেশের ফকির ও সন্ন্যাসীরা।সন্ন্যাসী বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য নেতা ছিলেন ভবানীপাঠক,দেবী চৌধুরানী,গণেশ গিরি প্রমুখ এবং ফকির বিদ্রোহের নেতারা ছিলেন মজনুশাহ ও মুসাশাহ নামে দুইভাই ছাড়াও চেরাগ আলী শাহ,পরাগল শাহ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ)। 

9. সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের দু’জন নেতার নাম উল্লেখ করো?
(A) চেরাগ আলী ও মজনুশাহ
(B) নুরুল উদ্দিন ও ভবানীপাঠক
(C) ভবানীপাঠক ও মজনুশাহ
(D) এনায়েত আলী ও সৈয়দ আহাম্মদ
Ans- (C) ভবানীপাঠক ও মজনুশাহ

10. রংপুরের বিদ্রোহ কত সালে হয়েছিলো?
(A) 1769
(B) 1779
(C) 1783
(D) 1773
Ans- (C) 1783
( রংপুরের বিদ্রোহ শুরু হয়েছিলো 1783 সালে নুরুল উদ্দিনের নেতৃত্বে)
1783 সালে কোম্পানির ইজারাদার দেবী সিংহের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রংপুরের বিরত্বপূর্ন সংগ্রাম “রংপুর বিদ্রোহ” নামে পরিচিত।
* কোম্পানি রংপুরে ও দিনাজপুরের ইজারাদার দেবী সিংহ সেখান কার জমিদার ভূস্বামী,রায়ত প্রভৃতির উপর চরম অত্যাচার শুরু করেছিলেন।অতিরিক্ত কর আদায়,অনাদায়ে দৈহিক নির্যাতন, রায়তের ঘর বাড়ী পুড়িয়ে দেওয়া কোনো কিছু বাদ যায়নি।এরূপ অবস্থায় দেবী সিংহের পিয়াদার খাজনা আদায়ের জন্য রায়তের বিষয়-সম্পত্তি যৎসামান্য মূল্যে বিক্রি করতে শুরু করলে রংপুরে রায়তরা বিদ্রোহ করতে শুরু করেছিলো। বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দুর্জ নারায়ণ নামে এক জনৈক ব্যক্তি 1783 খ্রিস্টাব্দের 18 ই জানুয়ারি। তাকে বিদ্রোহীরা “নবাব” বলে ঘোষণা করেছিলেন।এই কৃষক বিদ্রোহের কথা জানা যায় ঐতিহাসিক রণজিৎ গুহের “Elementary Aspects of Peasant Insurgency in Colonial India”- গ্রন্থ থেকে। রংপুর বিদ্রোহ ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হলে কোম্পানির সরকার(ওয়ারেন হেস্টিংস) সেনাবাহিনী দিয়ে এই বিদ্রোহ দমন করেছিলো।এই বিদ্রোহ দেবী সিংহের বিরুদ্ধে হলেও কার্যত এই বিদ্রোহ ছিলো সরকারের বিরুদ্ধে।কারণ দেবী সিংহকে ইজারাদার হিসাবে নিয়োগ করেছিলো কোম্পানির সরকার।এই বিদ্রোহ থেকে কোম্পানির সরকার বুঝতে পেরেছিলো যে ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ইজারাদারী ব্যবস্থা সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হয়েছে)।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.